বা ধূমপান ও সু-স্বাস্থ্য
ভূমিকা : ধূমপান মানবের জন্য বিষ পানেরই বিকল্পরূপ। মানুষ তার অভ্যাসের দাস, তার মধ্যে সবচেয়ে যে খারাপ ও ক্ষতিকর অভ্যাস তাই ধূমপান অভ্যাস " রবীন্দ্রনাথের সে গানের কলিটি মনে পড়ে যায় "আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান। এ জেনে শুনে বিষ পানে অভ্যস্থ বাঙালি সত্তর ভাগ। ইতিহাস : বর্তমান বিশ্বে ধূমপানের ব্যাপক প্রসার ঘটছে। রেড ইঞ্ডিয়ান থেকেই ধূমপান প্রবর্তিত হয়। ইণ্ডিয়ান লােকেরা বড় বড় তামাক পাতা জ্বালিয়ে ধোয়া পানে রত হয়, তার পর থেকে ধূমপান প্রচলন শুরু হয়। ক্মাগতভাবে আধুনিক সমাজে ধূমপান-এর আবির্ভাব। বাংলাদেশের কখন থেকে ধূমপান শুরু হয় তার হদিস পাওয়া যায় না। ইংল্যাণ্ড বাসিরা সর্বপ্রথম ধূম পান শিক্ষা পায় স্যার ওয়েণ্টার র্যালি থেকে। কিউবার রাজধানী হাভানায় প্রথম সিগারেট ফ্যাক্টরী স্থাপিত হয়।
ধূমপান পদ্ধতি : বিভিন্ন দেশে সাধারণত বিভিন্নভাবে ধূমপান পদ্ধতি আছে। ভারতের অধিবাসীরা পাতার বিড়ি, বাশের ও নারিকেল মালা ও ফার্সি হুক্কায় অভ্যস্থ। বাংলাদেশে উৎপাদনের দিক থেকে বিড়ি ও সিগারেট এর বহুল জনপ্রিয়তা আছে। বাংলাদেশ প্রায় ইংল্যাণ্ড এর ধুমপান প্রথাকে অনুকরণ করে। যতই বিশ্ব আধুনিকতার দিকে এগিয়ে চলছে ততই প্রাচ্যের সনাতন পদ্ধতির বিলুপ্তি ঘটছে।
ধূমপানের শিক্ষা প্রসার : মানুষ সাধারণত অনুকরণ প্রিয়, মানুষ দেখা দেখিতে অনেক কিছু শিখে নেয় এবং ফলপ্রসূ বহিঃপ্রকাশে ধূমপানের অভ্যাস। সাধারণত বাবা ও বড় ভাইদের অভ্যাস থেকেই ছােটরা অভ্যস্থ। অভ্যস্থ হয়ে যায়। এদেরকে। আনুষ্ঠানিকভাবে শিখাতে হয় না।
ধূমপানের অপকারিতা : ধূমপান আমাদের পানের মধ্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট পান। বিষ পানের মত ধূমপান অহরহ আমাদের জীবন শক্তিকে দুর্বল করে ফেলে, চরম মুহূর্তে আমাদের জীবন শক্তির নাশ ঘটে। ধূমপান আমাদের জীবনে এক ক্ষতিকর ব্যাধি। এ ব্যাধিতে আমাদের সমাজের প্রায় সত্তর ভাগ আক্রান্ত। যেসব কারণে বর্তমান বিশ্বে জটিল রােগের প্রাদুর্ভাব ঘটে তার সব কটির জন্যই ধূমপানকে দোষারােপ করা চলে। যে ধূমপান করে সে যেমন বিষপান করছে তদ্রুপ তার পাশাপাশি যে থাকে সেও ধূমপানের অপকারিতা থেকে রক্ষা পায় না। ধূমপান সমাজ, জাতি ও ব্যক্তি বিশেষে সর্বক্ষেত্রেই বিপদজনক। ধূমপান মানবের মারাত্মক ক্ষতি করে। ধূমপান পুরুষের প্রজনন ক্ষমতাকে হ্রাস করে।
ধূমপান নিরােধে উৎসাহ প্রদান : ধূমপান নিরােধের পদক্ষেপ একটি মহা পদক্ষেপ। স্বাস্থ্য সংস্থার দৃষ্টিতে এজন্য একটি বাজেট থাকা উচিৎ। আমাদের দেশে এখন "আধুনিক এর একটি পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে এর নিরােধকল্পে আরাে অন্যান্য সংগঠনগুলাে বিভিন্নভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ধূমপান-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন : জাতি ভুলের গতিতে প্রবাহমান। তাই ভুল ভাঙ্গানাের আপােষ মীমাংসায় কাজ না হলে, এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। বিড়ি সিগারেট-এর প্রচার বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে। বিদেশ থেকে ধূমপান জাতীয় দ্রব্য আমদানি বন্ধ করতে হবে, যারা এসব ব্যাপারে উৎসাহ দেয় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গঞ্জে ধূমপান-এর অপকারিতা সম্পর্কে সেমিনার ও সভা করতে হবে। গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলােকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
উপসংহার : পরিশেষে এটাই আমাদের স্বীকার করতে হবে, ধূমপান সবার জন্যই ক্ষতিকর। এতে অভ্যস্থ হলে মঙ্গল আসে না বরঞ্চ অমঙ্গলের দুর্বিষহ দহনে নিজকে নিবেদন করতে হয়। ধূমপান যেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঠিক তেমনি আর্থিক ব্যয়টাও ক্ষতিকর। তাই সকলকে ধূমপানে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
Post a Comment