SkyIsTheLimit
Bookmark

ভাবসম্প্রসারণ কাক কোকিলের একই বর্ণ স্বরে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন।

মূলভাব : জগৎ সংসারে আমরা যারা বাস করি, তাদের সবারই কিন্তু স্রষ্টা একজন। সকলেরই শরীরের গঠন, রক্তের বর্ণ এক হওয়া সত্ত্বেও আচরণ ও ব্যবহারে আমাদের মাঝে অনেক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এ পার্থক্যের দ্বারাই অনুধাবন করা যায় কে কোন ধরনের ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
সম্প্রসারিত-ভাব : কোন জিনিসের বর্ণের সাথে বা আকারের সাথে আরেকটা জিনিসের বর্ণের, আকারের মিল হতে পারে, তাই বলে তা এক নয়। কাক ও কোকিলের বর্ণ, ধরন একই হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে এক বলা যায় না। তাদের কথাই জানিয়ে দেয় কে কাক, কে কোকিল। যেখানে কোকিলের সুরেলা কণ্ঠে মানুষের মন জুড়ায়, সেখানে কাকের কর্কশ শব্দে মানুষের বিরক্তি আসে। এই কণ্ঠের পার্থক্য যেমন তাদের জাত চিনতে সাহায্য করে, তেমনি আমরা আমাদের সমাজে একইরকম অনেক মানুষরূপী কাক কোকিলকে একসাথে চলতে দেখি। কিন্তু তাদের মাঝে মিলের যে প্রাচুর্য তাতে তাদের মধ্যে প্রভেদ বের করাই যেন দুষ্কর। সে ক্ষেত্রে তাদের চরিত্রের যে মূল বৈশিষ্ট্য তা বিশ্লেষণ করলে সহজেই বােঝা যায় কে মানুষরূপী কোকিল, আর কে মানুষরূপী কাক। কাক আর কোকিলের মধ্যে যে অন্তর্দবন্দ্ু তা বুঝতে হলে দরকার অনুধাবন করার অপার শক্তি, যার দ্বারা যাচাই করে সঠিক ব্যক্তিত্বের রস আহরণ করা যায়। আমরা কারও ভিতরটা অনুধাবন করার চেষ্টা না করেই তাকে হৃদয়ের আসনে ঠাই দেই। তার গুণাগুণ যখন আমাদের কাছে ফাঁস হয়ে যায়, তখন কাকের কর্কশধ্বনিতে আমাদের বােধশক্তি ফিরে আসে, আর আমরা জেগে উঠি। জেগে উঠে দেখি আর সময় নেই। এ কারণেই কোকিলদের মধ্যে অসদুপায়ী কাক অবাধে বিচরণ করে, তারা সকলের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। কারণ, সাধারণের সাথে তাদের যে সাদৃশ্য তা তাদেরকে হেঁকে বের করাই রীতিমতাে অসাধ্য কাজ। আর এ অসাধ্যকে সমভব করতে হলে দরকার, তাদের বর্ণ আর মুখরােচক কথায় প্ররােচিত না হয়ে যথাসময়ে তাদেরকে চিহ্নিত করে দূরে সরিয়ে রাখা, যাতে তারা সাধারণ্যে এসে ভেজালের সমারােহ না ঘটাতে পারে। আর সুন্দর পৃথিবী যাতে সুন্দরই থাকে কলুষিত না হয়। কোন কিছুর বাহ্যিক সৌন্দর্যে আকৃষ্ট না হয়ে সৌন্দর্যের কাঠামােগত বিশ্লেষণের মাধ্যমেই তার সঠিক মূল্যায়ন করা প্রয়ােজন।

লেখা-লেখি করতে ভালোবাসেন? লেখালেখির মাধ্যমে উপার্জন করতে যুক্ত হতে পারেন আমাদের সাথে Telegram এ!
Post a Comment

Post a Comment